শীতকে ঘিরে সব সময় চলে ফ্যাশন বদলের রীতি। সেই বদলের ধারায় তরুণ-তরুণীদের মনে এখন বিশেষভাবে জায়গা দখল করে নিয়েছে সোয়েটার। শীতে এক সময় ভারি জ্যাকেট বা চাদর গুরুত্ব পেত বেশি। কিন্তু এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডে সোয়েটারও পিছিয়ে নেই। তরুণদের রুচি আর ডিজাইনারদের চিন্তায় পরিবর্তন এসেছে সোয়েটারে।
স্ট্রাইপ বা প্রিন্ট-নতুন নতুন মোটিফের সংযোজনে সোয়েটার এখন বেশ জনপ্রিয়। ফেব্রিক, রং, বোতাম আর পকেটের ব্যবহারের ব্যাপারটা মাথায় রেখে তরুণরা কিনছেন পছন্দের সোয়েটার।
মেয়েদের সোয়েটারে এবার দৈর্ঘ্য একটু বেশি ও স্ট্রাইপ বেশি চলছে। শর্ট সোয়েটারের একঘেয়েমি কাটিয়ে বাজারে এখন লং সোয়েটারের রাজত্ব। ফ্যাশন সচেতন তরুণীরা ঝুঁকছেন ড্রেপ কার্ডিগান বা লং সোয়েটারের দিকে। অনেক সোয়েটারের গলায় ওভার ফ্লিপ ডিজাইন ব্যবহার করা হয়েছে।
শীতের পোশাকের এখনকার ট্রেন্ড নিয়ে জেন্টল পার্কের চেয়ারম্যান ও ডিজাইন বিভাগের প্রধান শাহাদাৎ চৌধুরী বাবু বলেন, ‘অন্য পোশাকের ওপর পরার মতো সোয়েটার, শ্রাগ, পঞ্চ ইত্যাদি শীত পোশাক থাকছে এবার জেন্টল পার্কে। পশ্চিমা ট্রেন্ড অনুসরণ করে এসব শীত পোশাকের ডিজাইন করা হয়েছে। তবে কাপড়টা এ দেশের আবহাওয়া উপযোগী। মেয়েদের জন্য থাকছে রাউন্ডনেক, টার্টলনেক সোয়েটার। তরুণীদের জন্য আনা হয়েছে ক্যাজুয়াল ঘরানার নানা রকম পঞ্চ আর শ্রাগও।’
অল্প শীতে পাতলা সোয়েটার স্কিন জিন্স ছাড়াও সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরা যায়। কোমরে বেল্ট রয়েছে এমন শীতের পোশাক কিনছেন তরুণীরা। হালকা শীতের উপযোগী পাতলা কাপড়ের সোয়েটারও চলছে বেশ। যারা শাড়ি পরতে ভালোবাসেন তারাও ব্লাউজের বদলে বোট নেক কিংবা হাই নেকের সোয়েটারের সঙ্গে দিব্যি জড়িয়ে নিচ্ছে পছন্দের শাড়িটি।
ছেলেদের পোশাকের সঙ্গে এবার পাতলা সোয়েটার চলছে বেশ। অল্প শীতে পাতলা সোয়েটার আরামদায়ক। রাউন্ড নেক, ভি নেক, চিকন কলারের এসব সোয়েটারে থাকছে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন। সামনের দিকে চেইন বা বোতাম আছে কিছু সোয়েটারে।
স্লিভলেস সোয়েটার তো পুরুষদের অন্যতম পছন্দ। শার্টের ওপর পরার জন্য হাতাকাটা সোয়েটার মানানসই। ছেলেদের সোয়েটারের মধ্যে ফুল-স্লিভ সোয়েটার, রিব নিট কলার অ্যান্ড স্লিভ, কটন সোয়েটার, ফুল-স্লিভ সোয়েটার, কনট্রাস্ট কলার অ্যান্ড স্লিভ কটন সোয়েটার, ফুল-স্লিভ স্ট্রাইপড সোয়েটার, লং স্লিভ সোয়েটার প্রভৃতি বেশ জনপ্রিয়।
হুডি স্টাইলের সোয়েটারও তালিকার বাইরে নয়। কারণ তরুণদের অনেকে হুডি বলতে অজ্ঞান। পছন্দ অনুযায়ী তরুণরা ফুলহাতা ঢিলেঢালা সোয়েটারও পরছে, সঙ্গে মাথায় থাকছে কালারফুল টুপি, পায়ে পছন্দের কনভার্স জুতা।
ক্রসলাইন বাংলাদেশ লি. এর সিনিয়র মার্চেন্ডাইজার ওয়াকিল আহমেদ সোয়েটারের উপকরণ নিয়ে বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের চাহিদাকে মাথায় রেখে সোয়েটার তৈরিতে কটন, অ্যাক্রাইলিক, উল, নাইলন, অ্যাক্রাইলিক মিলান্জ, কটন মিলান্জ, ভিসকোজ, পপকর্ন, তামু ইত্যাদি ইয়ার্নের ব্যবহারই হচ্ছে বেশি। তবে হেভি নিটের ইয়ার্ন এখনও পুরোপুরি আমদানিনির্ভর।’
সোয়েটারে এমব্রয়ডারি, প্যাচওয়ার্ক, ফ্ল্যাট লক, ফার লাইনিং, শেরপা লাইনিং, জাকার্ড মেশিন দিয়ে তৈরি ডায়মন্ড শেপ ডিজাইন বা প্রিন্ট মোটিফ ব্যবহার হচ্ছে। কালো, সাদা, চাপা সাদা, ছাই, ধূসর ছাড়াও হলদে সবুজ, লাল, গোলাপি, নীল ইত্যাদি বিভিন্ন রঙের স্ট্রাইপ দেয়া সোয়েটার প্রাধান্য পেয়েছে।
দরদাম
বাজার ঘুরলে নানান দামের সোয়েটার পাবেন। শীতের এ সময়ে নিউমার্কেট, গাউসিয়া, বসুন্ধরা সিটিসহ সব শপিংমলেই পাওয়া যাবে সোয়েটার। ব্র্যান্ড ভেদে দামের তারতম্যও প্রচুর। বাজারে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকার ভেতরে ননব্র্যান্ড সোয়েটার পাওয়া যাবে। ক্যাটস আই, জেন্টল পার্ক, সারা এবং সেইলরসহ অন্যান্য ব্র্যান্ড শপগুলো থেকে কিনতে হলে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা গুনতে হবে আপনাকে।